আগামী ৮ মে প্রথম দফার উপজেলা ভোটের লড়াইয়ে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ততম সময় পার করছেন প্রার্থীরা। তবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে অনেকটাই শঙ্কায় আওয়ামী লীগ। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ভোট প্রয়োগে অনীহা দেখা দিতে পারে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে- এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না দলটির নেতারা। তবে দলটির দাবি, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি দেখাতে চান তারা। এজন্য ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে গুরুত্ব দিতে চান প্রচার-প্রচারণায়। ইতোমধ্যে তৃণমূলে শুরু হয়েছে লিফলেট বিতরণ। এমপি-মন্ত্রীসহ দলীয় নেতারা নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করলে সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনা হবে। এতে বিএনপির নেতারা ভোটারদের নিরুৎসাহিত করলেও তা খুব বেশি কাজে আসবে না- এমনটি মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকদের অনেকে।
উভয় সঙ্কটে আওয়ামী লীগ: নির্বাচন কমিশন প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করেছে। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা গিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে। একদিকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যেতে পারে। বিভক্তি হানাহানির চরম প্রকাশ ঘটতে পারে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা যেমন আশঙ্কা করছেন, তেমনি নির্বাচন উৎসবমুখর করা এবং ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও জরুরি। আর এর ফলে আওয়ামী লীগ একটি উভয় সঙ্কট পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরই আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, উপজেলা নির্বাচনে তারা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না। মূলত তিনটি কারণে আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। প্রথমত, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের ফলে সারাদেশে আওয়ামী লীগের ভেতরে যে কোন্দল, বিভক্তি সৃষ্টি দানা বেঁধে উঠেছে তা নিরসনের জন্য আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কাউকে নৌকা প্রতীক না দেয়ার ফলে কোন্দল হ্রাস হবে বলে আওয়ামী লীগ মনে করে। দ্বিতীয়ত, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণ এবং এর ফলে ভোটারদের যে উপস্থিতি বৃদ্ধি এটি আওয়ামী লীগকে আকৃষ্ট করেছে। ফলে আওয়ামী লীগ মনে করেছে উপজেলা নির্বাচনে যদি একাধিক প্রার্থী আওয়ামী লীগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেক্ষেত্রে নির্বাচনে ভোটার অংশগ্রহণ বাড়বে। তৃতীয়ত, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যারা ৭ জানুয়ারীর নির্বাচন বর্জন করেছে বিশেষ করে বিএনপি, তাদেরকে নির্বাচনে আনার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের এটি একটি কৌশল। কারণ যখন নৌকা প্রতীক থাকছেনা তখন বিএনপির অন্যরাও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী হবে। আর একারণেই আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে স্থানীয় পর্যায়ে সেচ্ছাচারী, নৈরাজ্যকর একটি অবস্থা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের চেইন অফ কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। আগে যেমন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হতো এবং তার বিরোধিতা করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সতর্ক করা হতো, এখন সেই সতর্ক দেয়ার মতো অবস্থা নেই। কারণ যে যেভাবে পারছে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছে। কোথাও কোথাও ৭-৮ জন আওয়ামী লীগের নেতা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন। একই উপজেলায় যদি ৬-৭ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয় তাহলে সংগঠন ৬-৭ ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এ বিভক্তিটি সহজেই মিটমাট হওয়ার নয় বলে দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। শপয উপজেলা নির্বাচনে সবচেয়ে বড় বিভক্তি দেখা যাচ্ছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিভক্তির ধারাবাহিকতা হিসেবেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টির বেশি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী অর্থাৎ যারা আওয়ামী লীগের নেতা অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরকম ৫৮ জন বিজয়ী হয়েছেন। এখন যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছেন তারা যেমন উপজেলা নির্বাচনে তাদের শক্তি পরীক্ষা করতে চাচ্ছেন তেমনি যারা দলীয় প্রতীকে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারাও তাদের অবস্থানকে সংহত করার জন্য তাদের পছন্দের প্রার্থী দিচ্ছেন। যার ফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই একটা শঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এর পাশাপাশি উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত, জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি অংশগ্রহণ করছে- এ ব্যাপারে মোটা-মুটি নিশ্চিত। আর এ অংশগ্রহণে শেষ পর্যন্ত যদি তারা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে উপজেলা নির্বাচনে একটি বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে আওয়ামী লীগ।
‘অনুগত’ প্রার্থীদের পক্ষে এমপিরা: সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও বেশির ভাগ সংসদ সদস্য ভোটের মাঠে কলকাঠি নাড়ছেন। তাঁরা নিজেদের ‘অনুগত’ প্রার্থীর পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদেরও নির্দেশনা দিচ্ছেন। সংসদ সদস্যদের অনেকের বিরুদ্ধে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ভোটের মাঠে প্রকাশ্যে না থাকলেও বেশির ভাগ সংসদ সদস্য ভেতরে-ভেতরে কলকাঠি নাড়ছেন। এমনকি তাঁরা নিজেদের ‘অনুগত’ প্রার্থীর পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান–মেম্বারদের ফোনে নির্দেশনা দিচ্ছেন। এ ধরনের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, মিরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের নিজেদের অনুগত প্রার্থী রয়েছেন। সংসদ সদস্যরা প্রকাশ্যে মাঠে নেই। কিন্তু তাঁরা নিজ নিজ অনুগত প্রার্থীকে জেতাতে তাঁদের অনুসারীদের ভোটের মাঠে নামিয়েছেন। ৮ মে প্রথম ধাপে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ ও মিরসরাই উপজেলায় এবং ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে চার উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ভোট হবে হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলায়। ভোট হতে যাওয়া চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলাতেই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। যদিও এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেয়নি আওয়ামী লীগ। কিন্তু প্রার্থীদের দলীয় প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা রয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা একই দলের বিভিন্ন প্রার্থীকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তারমধ্যে সন্দ্বীপ উপজেলায়ও সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুদ্দিন মিশন এক বছর আগে উপনির্বাচনের মাধ্যমে ওই চেয়ারে বসেছিলেন। তখন সংসদ সদস্য তাঁকে সমর্থন দিয়েছিলেন। মাঈনুদ্দিন মিশনের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আলোচনায় এসেছেন মগধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের এই নেতা নিজেকে সংসদ সদস্যের প্রার্থী হিসেবে দাবি করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একইভাবে সীতাকুণ্ডে আরিফুল আলম চৌধুরীকে জেতাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন নগরের একটি ক্লাবে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মহিউদ্দিনের অভিযোগ, এমপি সাহেব নিজে আরিফুল আলমের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করছেন। সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত দলের প্রার্থীর প্রচারণার ক্যাম্পগুলোই ওই প্রার্থীর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন বলেন, এগুলো ভিত্তিহীন কথা। আমি কারও পক্ষে কোনো কাজ করিনি। জমে উঠেছে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন। অন্যদিকে দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রার্থী হয়েছেন শিল্পমন্ত্রীর ছোটো ভাই আর, সাথে লড়ছেন আওয়ামী লীগেরই তিন নেতা। গাজীপুরের কালীগঞ্জে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের কেউ গত সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আখতারউজ্জামানের পক্ষে কাজ করেছেন। আবার, পরাজিত হয়ে পরে সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকির হয়েও যারা কাজ করেছেন তারাও আছেন লড়ছেন ভোটের মাঠে। দ্বিতীয় ধাপে ২১শে মে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় নির্বাচন। ভোটে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বজনদের ভোট থেকে সরে দাঁড়াতে শাসক দল আওয়ামী লীগের নির্দেশনার কারণে স্থানীয় নেতাকর্মীদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের ছোট ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল মজিদ মাহমুদ। তার, প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াশীষ কুমার রায় ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান রঙ্গু। চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল হক বলেন, মনোহরদী উপজেলা উত্তরাঞ্চলসহ সব অঞ্চলে আমার ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে।
ভোটারদের নিরুৎসাহিত করছে বিএনপি: উপজেলা নির্বাচন বর্জনের পর ভোটারদের নিরুৎসাহিত করছে বিএনপি। ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে না যান এবং নিজেদের ভোট প্রয়োগ থেকে দূরে থাকেন, সেজন্য লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন তারা। সর্বশেষ গতকাল রোববার রাজধানীর বেইলি রোডে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপজেলা নির্বাচন বর্জন করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, গত ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ডামি নির্বাচন করার পরে আবার উপজেলা নির্বাচন করছে। এ নির্বাচনও ডামি হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারে না। তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বানাতে পারে না। দেশের এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বর্তমান ডামি নির্বাচনের সরকার শেখ হাসিনা। তিনি এই পরিস্থিতি কেন করেছেন, কারণ তিনি এদেশের সম্রাজ্ঞী হয়ে থাকতে চায়। ব্যাংক লুট করার জন্য, বিদেশে টাকা পাচার করার জন্য। তিনি আরও বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করার পরে শেখ হাসিনা আবার উপজেলা নির্বাচন করছে। এ নির্বাচনও ডামি কারণ দেশের গণতান্ত্রিকামী কোনো দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। এ সময় তিনি দেশের সকল জনগণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা এই ডামি সরকারের অধীনে ডামি নির্বাচনে কেউ অংশগ্রহণ করবেন না এবং এখানে যারা উপস্থিত আছেন সবাই কোনো না কোনো উপজেলার বাসিন্দা। আপনারাও কেউ এই ডামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। বিএনপির এমন তৎপরতা নির্বাচনের মাঠে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এতে ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে দলীয় কর্মসূচির দিকে মনোযোগ দিতে চান তারা। বিশেষ করে সবাই যেন কেন্দ্রে আসেন এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, সেজন্য দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে দলের সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির এক সভায় এ নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি জনসংযোগ করার নির্দেশনাও দেন তিনি। উপজেলা নির্বাচনে ভোটার বাড়াতে দলীয় নির্দেশনার পর কাজ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী ভোটারদের উৎসাহ দেওয়া, তরুণ ভোটারদের কেন্দ্রেমুখী করা, নির্বাচনকেন্দ্রিক দলীয় সংঘাত-সহিংসতা রোধ করা, নির্বাচন এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখা, সরকারবিরোধী অপপ্রচার সম্পর্কে সচেতন করা, সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরাসহ নানামুখী কার্যক্রম শুরু করেছেন। এছাড়া কীভাবে ভোটার বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যেন ভোটকেন্দ্রে আসে এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যে পরিবেশ, তাতে মনে হচ্ছে ভোটার উপস্থিতি ও নির্বাচন অনেক ভালো হবে। তিনি বলেন, বিএনপি ভোটারদের ভোট না দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ওটা তাদের দলীয় বিষয়। তবে কীভাবে ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি। একইসুরে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চায় বিএনপি। তাই নির্বাচন বর্জন করলেও তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের এ অপপ্রচার কোনো কাজে আসবে না। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। তিনি আরও বলেন, ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংকট, সংশয় ও শঙ্কা নেই। তবে আমরা সতর্ক আছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
সরগরম ভোটের মাঠ, প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা
উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় আওয়ামী লীগ
- আপলোড সময় : ০৬-০৫-২০২৪ ০৫:৪৬:২১ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৬-০৫-২০২৪ ০৫:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ